Friday, September 30, 2011

সজীব আহমেদ ওয়াজেদ যেভাবে পাল্টে দিচ্ছেন বাংলাদেশ



সজীব আহমেদ ওয়াজেদ যেভাবে পাল্টে দিচ্ছেন বাংলাদেশ
মোঃ হাসিবুল হাসান হাবীব
সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় তার পরিচয় নিয়ে বলার কিছু নাই । আমি শুধু কিছু ব্যাপার ব্লগারদের সাথে শেয়ার করতে চাই তা হল বাংলাদেশের প্রতি তার অবদান । কাদার মধ্যে থেকেও গায়ে কাদা না লাগিয়ে পথ চলেছেন তিনি । তার মা তাকে রাজনীতি থেকে বহুদূরে রেখে দেশের জন্য কাজ করার জন্যে তাকে তৈরী করেছেন । সবসময় বলেছেন তোমরা সবসময় মনে রাখবা তোমরা কার নাতী । ডিজিটাল বাংলাদেশ জয়ের একটা স্বপ্নের নাম । সেই স্বপ্নকে পুরনের জন্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন জয় ।
জয় বলেন  কারও দুর্নীতি থেকে অভিজ্ঞতা অর্জনের প্রয়োজন আমার নেই। নিজেকে সব ধরনের অপবাদমুক্ত রাখতেই আমি দেশের সকল কার্যক্রম থেকে দূরে থাকি।
ডিজিটাল বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কর্মীদের নিয়ে ধারাবাহিক লেখার ইচছা ছিল । সেই ইচ্ছা থেকে জয় কে দিয়ে এই লেখা শুরু করলাম । ব্যক ক্যাল্কুলেশন অব ডিজিটাল বাংলাদেশ । এইটা পার্ট ওয়ান । অনেক জায়গা থেকে অনেক ইনফো নিছি কিন্তু এইটা তো ব্লগ রিসার্চ পেপার না তাই আর অত ফাইন টিউনিং এ যাই নাই ।
ব্যঙ্গালরের সেন্ট জোসেফ থেকে কম্পিঊটার সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েশন করেন ম্যাথ এবং ফিজক্স সহ । তার পর টেক্সাস ইউনিভার্সিটি । তার পর হার্ভাড ইনোভেশন ইন গভর্নেন্স ।
জয় কাজ করে যাচ্ছেন মুলত আডভাইস করে ।
শেখ হাসিনাকে আডভাইস করে ১৯৯৬ সাল থেকেই । জয়ই বাংলাদেশে কম্পিঊটারের ব্যাবসায় ট্যাক্স ফ্রি করার প্রস্তাব দেন ১৯৯৬ এই । আজও আমরা সেই সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছি ।
কমিউনিকেশন এবংকানেক্টিভিটির মাধ্যমে দেশেকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যে সজীব প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন বাংলাদেশ কে সাবমেরিন কেবলের সাথে যুক্ত করার এবং ১৯৯৬ এ আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় আসার পরে সেই এই কাজটি করার প্রস্তাব দেন এবং সরকার তা করেও ।
কিন্তু গত পৌনে তিন বছরে জয় যুগান্তকারী ভুমিকা পালন করেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে । বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম যৌথভাবে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার আয়োজন করে। মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে জয় বলেন ,
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন উদ্ভাবনের ফলে মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হবে। আর এটাই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য । সরকারি-বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সিষ্টেম তৈরির ফলে দেশের মানুষ লাভবান হবে। জীবন ধারার পরিবর্তন হবে। দেশে টেন্ডারবাজি থাকবে না, এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য সরকার সব রকমের সাহায্য-সহায়তা করবে ।
বঙ্গবন্ধু পরিবার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। আমাদের শিক্ষা আছে, মেধা আছে। মেধা খাটিয়েই আমরা অঢেল অর্থ উপার্জন করতে পারি। তাই দেশের সম্পদ চুরি করার প্রয়োজন নেই।
সজীব আহমেদ চান যে তথ্যপ্রযুক্তির সেবা গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে যাক । গ্রামের মানুষের হাতের মুঠোয় তথ্যপ্রযুক্তির সেবা পৌছে যাক । এখন অনেক কিছুই কি হচ্ছেনা যা ৩ বছর আগেও মানুষ ভাবেনি ??
আডমিশন ফরম কালেক্ট থেকে শুরু করে সরকারের সমস্ত ফর্ম এখন অনলাইনে আছে । এবং তা অনলাইনে পূরন করে জমা দেবার ও সুবিধা আছে । মোবাইল ইন্টারনেট কি না করেছে , মোবাইল ব্যাঙ্কিং পর্যন্ত এখন বাংলাদেশে হচ্ছে ।টেন্ডার জমা দেয়া , স্বাস্থ্য সেবা , ক্রিষি সেবা , মোবাইলের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট ,এটিএম মেশিন ,কল সেন্টার এ সবের মূলেই রয়েছে একটা স্বপ্ন এবং তার পেছনে নিঃস্বার্থ এবং নিরলস পরিশ্রম । সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন । বাংলাদেশে এখন একটা আইটি পার্ক আছে ।
সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের আডভাইসে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ । শুধু মাত্র কলসেন্টারে এখন ৪০০০ এর বেশী ছেলে মেয়েরা কাজ করছে । বিদ্যুৎ ঘাটতি আরো কমে এলেই বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পের থেকে সম্ভাবনা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করবে কলসেন্টার খাতটি । এইবারই দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত ৫২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে । ঢাকা সহ সারা দেশের কনষ্ট্রাকশনের মাধ্যমে কানেক্টিভিটি এনশিঊর করার জন্যেও জয় কাজ করে যাচ্ছেন ।
শিশু স্বাস্থ্য ও মৃত্যুহার কমিয়ে আনার সাফল্যে গত বছর জাতিসংঘে মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট পুরস্কার গ্রহনের কথা উল্লেখ করে বলেন
আমরা মনে করি শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য মায়ের সুস্বাস্থ ও যত্ন দরকার । এ জন্যে দেশের ১১ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিককে ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে । এটি অত্যান্ত সৌভাগ্যের বিষয় যে আমরা আমাদের বন্ধুদের কাছ থেকে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তির কাজের স্বীক্রিতী পেয়েছি । এই স্বীক্বিতী আমাদের ঈপ্সিত লক্ষ অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরনা যোগাবে ।
এইসব আওয়ার্ড সজীব আহমেদ ওয়াজেদের কারনেই সম্ভব হয়েছে ।
জয় বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ব্যাপারে আমি আমার মাকে বুদ্ধি পরামর্শ দেই। আমি বিদেশে বসবাস করি। তাই এসব কাজ আমার পক্ষে করা সম্ভব নয়। সরকারের সঙ্গে যারা আছেন, তারা এসব কাজ বাস্তবায়ন করেন।
১৯শে সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনাকে বিশ্ব মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে অবদান রাখার জন্যে সাউথ সাউথ পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে । জাতিসংঘ ইকনমিক কমিশন ফর আফ্রিকা ,আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন ও সাউথ নিউজ যৌথভাবে আয়োজন করে পুরস্কার দেয় এবং এর প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল: ডিজিটাল হেলথ ফর ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট
আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের সেক্রেটারী জেনারেল ডঃ হামদুন টোরে নিউইয়র্কের ওয়ালডর্ফ এষ্টোরিয়া হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন । পুরুস্কার গ্রহন করে শেখ হাসিনা বলেন — “এটি বংলাদেশের জনগণ ও সরকারের কঠোর পরিশ্রমের স্বীক্রিতি । বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যাবহার করেছে । মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া ও যক্ষারোগের চিকিতসা দেওয়া হচ্ছে ।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন
ডিজিটাল বংলাদেশের পরিকল্পনা দ্রুত গতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে । যে গতিতে উন্নয়ন ঘটছে তা কেঊ কল্পনাও করতে পারেননি । এর সুফল হিসেবে সাউথ সাউথ এওয়ার্ড মিলেছে । বর্তমান আওয়ামিলীগ সরকার ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ গ্রেডে ২২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করেছে ,যা ইতিহাসে প্রথম । বাংলাদেশে প্রথমবারের মত বিদ্যুৎ উতপাদন ৫২০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে । দেশের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে সরকার সারা দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সর্বোচ্চ অগ্রধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে । ২৬ টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ দেওয়া শুরু করেছে । আরো ৩৪ টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে । এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আগামি বছরের মধ্যেই চালু হবে । ২০১২ সালে বিদ্যুৎ সেক্টর দেশের চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ উদ্ব্বত্ব বিদ্যুৎ উতপাদনে সক্ষম হবে ।
দেশে এখন রয়েছে যানজট , তবে বর্তমান সরকার যানজট নিরসনে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে চলছে । ইতিমধ্যেই ঢাকা শহরসহ সারাদেশে ব্রিজ ,ওভারপাস ,বাইপাস ,ঊড়ালসেতু ,হাইওয়ে সম্প্রসারনের কাজ যেভাবে শুরু করেছে সরকার, যানজট নিরসনে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে পারলে যানজট সমস্যার দ্রুত নিষ্পন্ন সম্ভব ।
অত্যন্ত ম্যাচ্যুউর বক্তব্য । সে এখন পুরো তৈরী বাংলাদেশকে নেত্রিত্ব দিতে । শুধু ডেভেলপমেন্ট এক্টিভিজ ছারাও পলিটিক্যালি সে এখন অনেক ম্যাচিওর । এই তো সেদিন ছাত্রলীগের ২৭তম কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন:
ছাত্রলীগ এগিয়ে গেলেই দেশ এগিয়ে যাবে। ছাত্রলীগ হচ্ছে জাতির ভবিষ্যৎ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছি বলেই আমাদের সুযোগ হয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার।
তিনি আরো বলেন -
আমি এসেছি আপনাদের শুভেচ্ছা জানাতে। সারাদেশ থেকে যে ডেলিগেট ভাইরা এসেছেন তাদেরকে ভালবাসা জানাতে। অতীতে ছাত্র লীগের নেতা-কর্মীরা দেশকে অনেক কিছু দিয়েছেন। দেশের মানুষও এই সংগঠন থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে।
তার হার্ভাড গ্র্যাজুয়েশন শেষে সনদ বিতরন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন
আমার মার স্বপ্ন ছিল হার্ভার্ড থেকে আমি গ্রাজুয়েশন করি। তাঁর এই স্বপ্ন পূরনে সফল হতে পেরে ধন্য মনে করছি। এছাড়াও আরো অনেক কিছুই করার আছে। তার সবটাই চেষ্টা করবো পূরন করতে।
গনতান্ত্রিক বাংলাদেশে সুখের অনুভুতি প্রতিটি মানুষকে স্পর্শ করুক। সুন্দর ভবিস্যত নির্মানে ভোরের সূর্য কিরণে অবগাহিত হোক বাংলাদেশ। ধুয়েমুছে সাফ হোক অন্যায় অসত্য আর মিথ্যাচার। প্রতিষ্ঠিত হোক গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ। এই সময়ে এটাই আমার প্রত্যাশা।
ধন্যবাদ জানাই জয় ভাইকে । তার নিরলস নিস্বার্থ কাজ এগিয়ে যাক , এগিয়ে যাক বাংলাদেশ । এমন অনেক কিছুই আরো এদেশের মানুষ পাক , যা আগে কেউ কখন ভাবেও নি । আমার বাংলাদেশ হয়ে উঠুক সোনার বাংলাদেশ ।
জয় বাংলা ।

Wednesday, September 28, 2011

National 4 Leaders of Bangladesh


সৈয়দ নজরুল ইসলাম

সৈয়দ নজরুল ইসলাম (১৯২৫- নভেম্বর ৩, ১৯৭৫) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি।১০ই এপ্রিল ১৯৭১ - ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।সৈয়দ নজরুল ইসলাম বালাদেশের ইতিহাসের প্রধানতম পুরুষ, যার প্রত্যক্ষ


নেতৃত্বে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার মধ্য দিয়ে পাকিস্থানের হাত থেকে বাংলাদেশ কে পরাধীনতা থেকে মুক্ত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের স্বাধীন ভুখন্ড উপহার দেয় । এই ঘটনাটি বাঙালি জাতিসত্বাকে বিশ্ববাসীর সামনে গর্বিত পূনরূত্থানের সুযোগ করে দেয়।তিনি ১৯৫৭ সালে খ্যাতিমান রাজনী


তিক, সু-সাহিত্যিক ও পাকিস্তানের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আবুল মনসুর আহমেদকে কাউন্সিলের মাধ্যমে হারিয়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং এ পদে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ছিলেন ৷ ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ তিনি আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন ৷ ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবিতে দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন শুরু হলে আইয়ুব সরকার আওয়ামীলীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর র

হমানকে গ্রেফতার করার পর সৈয়দ নজরুল ইসলাম দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ৷ তিনি ছিলেন ডেমোক্রেটিক এ্যাকশন কমিটির (DAC) অন্যতম কর্ণধার।[২] রাজনৈতিক অচলাবস্থা দূর করার জন্য রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথমে ১৯৬৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি এবং পরে ১০-১৩ মার্চ দু'দফা এ বৈঠক হয়৷ তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের অন্যতম নেতা হিসেবে এ সময় বৈঠকে যোগদান করেন.

তাজউদ্দীন আহমদ

তাজউদ্দীন আহমদ (জুলাই ২৩, ১৯২৫ - নভেম্বর ৩, ১৯৭৫ ) বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সাফল্যের সাথে পালন করেন। একজন সৎ ও মেধাবী রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছিল।

তাজউদ্দীন আহমদ মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন যা 'মুজিবনগর সরকার নামে অধিক পরিচিত। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসাবে ১৯৭৪ সাল পযর্ন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমা


ন সপরিবারে নিহত হবার পর আরও তিনজন জাতীয় নেতা সহ তাকে বন্দিকরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। সেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেই ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর বন্দি অবস্থায় ঘাতকের বুলেটে তিনি নিহত হন।

২২শে ডিসেম্বর তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ বাংলাদেশ সরকারের নেতৃবৃন্দ ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন। শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে আসলে তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭৩-এ ঢাকা-২২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন৷ বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় বাজেট পেশ করেন, প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন।

১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের সমাপনী অধিবেশনের বক্তৃতায় তিনি দল, সরকার এবং নেতা ও কর্মীদের মাঝে দূরত্ব দূর করে, সংগঠন এবং সরকারের মাঝে এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভবিষ্যত্‍ নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান৷

পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর সাথে তাজউদ্দীনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ ৩০ বছরের বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সহকর্মীকে ভুল বুঝেন। ১৯৭৪ সালের ২৬শে অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তাজউদ্দীন মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট প্রথম গৃহবন্দী ও পরে ২২ আগস্ট গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

A H M Kamruzzaman

one of the national four leaders of Bangladesh was born 26 June of 1926 at Nupur village near Malanchi railway station of Natore District of Rajshahi Division. He was the first son out of 12 children of his parents Abdul Hamid Mia and Zebun-nesa. Abdul Hamid Mia was an inhabitant of Kadirganj of Rajshahi District. His grandparents called him Hena. His education began at the traditional Rajshahi Collegiate School. He has politics on his blood. His grandfather Hazi Lal Mohammad Sardar was elected as a member of Legislative Council twice in his life. His father was also an M L A of East Bengal.
Kamruzzaman was aware of politics from his student life. In 1942 he was elected as secretary of Bengal Muslim League of Rajshahi branch.He was married with Jahanara in 1951. He became father of 6 children.

In the sixties Ayub Khan introduced Fundamental Democracy for a short period. Kamruzzaman became Member of Parliament twice in 1962 and 1966. In 1966 he engaged himself with Sheikh Mujib's 6-point autonomy plan. In 1967 he became the general secretary of all Pakistan Awami League. In 1969 he resigned from the Parliament in the favour of 11-point of students and all political parties. He was again elected as a Member of Parliament in 1970 from Rajshahi. Kamruzzaman was one of the member of high command of Sheikh Mujib. In 25 March of 1971 when the Pakistani Military started the genocide he along with Sheikh Fazlul Haque Moni, Tofael Ahmed and some others went to Bogro as dictated by Sheikh Mujib. On 17 April 1971, temporary Mujibnagar Govt. of Bangladesh was formed. He took the responsibility of relief and rehabilitation ministry. There were some misunderstanding between the Govt. He worked to remove all the misunderstandings throughout the Liberation war. After the war he engaged for different ministries at the interval of 1972-74. He was also elected as MP at two seat of Rajshahi in 1973. He resigned from the cabinet on January 18, 1974 to serve as president of the Awami League. In 1975, Qamaruzzaman was appointed minister of industries and a member of the executive committee of
BAKSHAL. He continued to support Mujib despite his assumption of dictatorial powers and a ban on all political parties except BAKSAL.

Muhammad Mansur Ali(Bangla:মুহাম্মদ মনসুর আলী)

(1919 – November 3, 1975) was a Bangladeshi politician who was a close confidante of Sheikh Mujibur Rahman, the founding leader of Bangladesh. A senior leader of the Awami League, Mansur also served as the Prime Minister of Bangladesh in 1975.

Political career

Rising to public prominence, Mansur was widely known as "Capt. Mansur." He left the Muslim League to join the newly-formed Awami Muslim League of A. K. Fazlul Huq and Huseyn Shaheed Suhrawardy. He would soon be elected member of the party's central executive committee and president of its Pabna District unit. Mansur was arrested by police in 1952 for helping to organise protests against the declaration of Urdu as the sole official language, in what became known as the Language Movement. Mansur and his party demanded that Bengali also receive recognition and the provinces be granted autonomy. After his release, Mansur was elected a member of the East Pakistan Legislative Assembly in 1954 as a candidate of the United Front alliance of various political parties. In the cabinet headed by Ataur Rahman Khan, Mansur served in different periods as the province's minister of law, parliamentary affairs, food, agriculture, commerce and industry. Mansur was re-arrested in the aftermath of the coup d'etat led by Ayub Khan, who became President of Pakistan and imposed martial law. He would remain incarcerated from 1958 to 1959.

Bangladeshi leader

Mansur Ali played an important role in the Six point movement led by the Awami League politician Sheikh Mujibur Rahman, who demanded substantial regional autonomy and opposed the military regime. Mansur was a key party organiser in the period when Mujib was arrested by the army. In the 1970 elections, he was elected a senior member of the legislative assembly. At the outbreak of the Bangladesh Liberation War in 1971, Mansur went underground to organise a government in exile. Declaring the independence of Bangladesh, Mansur became the minister of finance in the Mujibnagar government. In this period, Mansur helped organise the guerrilla movement led by the Mukti Bahini and provide political leadership in the absence of Mujib, who had been arrested by Pakistani forces.

After the independence of Bangladesh, Mujib became the prime minister and appointed Mansur as the minister of communications and later home affairs. Mansur became a key political ally of Mujib and rose in importance as criticism and opposition to Mujib's regime increased. After the introduction of a one-party, presidential system in 1975, Mujib became the President of Bangladesh and assumed sweeping powers. Mansur was appointed the prime minister. He helped Mujib organise the Bangladesh Krishak Sramik Awami League, the only legalised political party in the nation and served as its secretary-general. Mansur helped Mujib suppress political opposition, implement large-scale programmes under state socialism and organise a militia of political loyalists known as the Jatiyo Rakkhi Bahini, which was held responsible for the arrests, torturing and deaths of Mujib's opponents.

Thursday, September 22, 2011

বিএনপি তারেক-কোকো আর যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় হরতাল ডেকেছে: আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ


বিএনপি তারেক-কোকো আর যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় হরতাল ডেকেছে: আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ
 যুদ্ধাপরাধীদের জেল থেকে ছিনিয়ে আনার লক্ষ্যে জামাত কমান্ডো হামলা চালায়: সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম
২২ সেপ্টেম্বর ২০১১ | ৭ আশ্বিন ১৪১৮
আওয়ামী লীগ নেতারা হরতালের নামে নৈরাজ্য ও সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে জনগণের জানমাল রক্ষায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আজ হরতাল চলাকালে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়ে তারা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ায় বিএনপির মাথায় আগুন ধরে গেছে। জামায়াত উন্মাদ হয়ে গেছে। এ কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় হরতাল ডেকেছে তারা। বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন। সোমবার ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অগি্নসংযোগ, ভাংচুরসহ গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে দেশে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এই যুদ্ধে জয়ী হয়ে বাংলাদেশকে রাজাকারদের হাত থেকে আরেকবার স্বাধীন করতে হবে। তিনি বলেন, একাত্তরে ছেড়ে দেওয়া হলেও বিএনপির দোসর জামায়াতকে এবার ছেড়ে দেওয়া হবে না। সবকিছুর বিচার অবশ্যই করা হবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাজারে সব জিনিস পাওয়া গেলেও দাম একটু বেশি থাকায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানাই, দাম কমান। মানুষকে কষ্ট দিয়ে লাভ করার চেষ্টা করবেন না।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ায় বিএনপির মাথায় আগুন ধরে গেছে, জামায়াত উন্মাদ হয়ে গেছে। নিজামী-সাঈদীরা জেলে থাকায় এবং এক ছেলের বিচার শেষে আরেক ছেলের বিচার শুরু হওয়ায় খালেদা জিয়ারও ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এ কারণে দুর্নীতিবাজ ও একাত্তরের মানুষ হত্যাকারী জামায়াতকে বাঁচাতে খালেদা জিয়া হরতাল ডেকেছেন।
তিনি বলেন, হরতালে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের মোকাবেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই যথেষ্ট। এর পরও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সব সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এই সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডিমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিএনপির হরতালের কোনো ইস্যু নেই। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ নীতিনির্ধারক অধিকাংশ নেতার মতামত উপেক্ষা করে এবং জামায়াত ঘরানার বিএনপিপন্থি একটি দৈনিকের সম্পাদকের পীড়াপীড়িতেই খালেদা জিয়া এ হরতাল ডেকেছেন। এর সঙ্গে বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীদের কোনো সম্পৃক্ততাও নেই। 'চাকরি' ও 'পদরক্ষা' এবং লোক দেখানোর জন্য হরতালে মাঠে না নামতে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এতে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। তিনি বলেন, সোমবার কোনো বিক্ষোভ মিছিল নয়, পূর্বপরিকল্পিতভাবে ও কমান্ডো স্টাইলে পুলিশ হত্যার উদ্দেশ্যেই জামায়াত রাজপথে নৈরাজ্য ঘটিয়েছে। এটি ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার থেকে রক্ষায় বিকল্প উপায়ে তাদের জেল থেকে বের করে আনার নির্লজ্জ চেষ্টা, যা দেশ ও জাতির জন্য অশনিসংকেত। তবে সরকার তার নৈতিক দায়িত্ব পালনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেই ছাড়বে।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, হরতালের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না। শেখ হাসিনার গণতান্ত্রিক সরকার গণতান্ত্রিক উপায়েই দেশ পরিচালনা করতে চায়। কিন্তু হরতালের নামে রাজপথে কেউ নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইলে সরকার তাদের কঠোরহস্তে দমন করবে। রাজপথে সজাগ থেকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো এই নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের মোকাবেলা করতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মাহবুবুল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এমপি, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ এমপি, হাজী মোহাম্মদ সেলিম, শাহে আলম মুরাদ, আবদুল হক সবুজ, আসলামুল হক আসলাম এমপি, অ্যাডভোকেট সানজিদা খাতুন এমপি, সাহিদা তারেক দীপ্তি এমপি, সাইফুজ্জামান শিখর, আনিসুর রহমান আনিস, শেখ আনিস উজ জামান রানা প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক লীগের হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, খালেদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক-কোকো ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা এবং সরকারের সফলতা ম্লান করতেই বিএনপি হরতালের ডাক দিয়েছে। তবে হরতাল ও হুমকি-ধমকি দিয়ে কোনো কাজ হবে না। জাতির কাছে ওয়াদাবদ্ধ বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধী এবং ২০০১-০৬ সালের সব দুর্নীতির বিচার করবেই।

Thursday, September 15, 2011

শুদ্ধি অভিযান ॥ আওয়ামী লীগে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে.ত্বত্তাবধায়ক সরকার ছাড়াই নিবার্চন হবে, সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


ত্বত্তাবধায়ক সরকার ছাড়াই নিবার্চন হবে, সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘে সারাবিশ্বের জন্য একটি শান্তির মডেল উপস্থাপন করেছি, যার নাম হলো 'জনগণের ক্ষমতায়ন ও শান্তির মডেল''প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, বিরোধী দলকে নির্বাচনে আসতেই হবে। যুক্তরাষ্ট্র সফর এবং জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শনিবার এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধী দলের সঙ্গে সংসদে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে বলেও আবার মন্তব্য করেন হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, "নির্বাচন হবেই, হবেই, হবেই। জনগণ নির্বাচন করবেই, করবেই, করবেই। "উনি (খালেদা) এত কথা বলছেন,,, উনি নির্বাচনে আসবেন। উনাকে নির্বাচনে আসতেই হবে। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে নির্বাচনে আসতেই হবে।" নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগপ্রধান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে দায়ী করেন শেখ হাসিনা।
চলমান রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূর করতে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে কি না- প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "তিনি (খালেদা) তো সময় বেঁধে দিয়েছেন সরকার উৎখাতের, তাহলে আর আলোচনা কীসের? "সংসদে চলে আসুক, সংসদে কথা বলুক, সংসদেই আলোচনা হবে।" নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতা হস্তান্তরের আশা প্রকাশ করে হাসিনা বলেন, জনগণ নির্বাচন চায়। ভোট দেওয়া জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। জনগণ যদি ভোট না দেয়, সে ক্ষমতা আমরা চাই না। খালেদা জিয়া বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নাকি নির্বাচন করবেননা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কিভাবে নষ্ট করে ফেলা যায় তা বিএনপি-জামাত দেখিয়েছে। এই সেই বিএনপি যারা ১৯৯১ সালে লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় এসেছিলো। মিরপুর ও মাগুরায় ভোট কারচুপির মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিয়েছিল।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ গঠন করছিল। এমনকি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুনী কর্ণেল রশিদকে বিরোধীদলের নেতার পদ দিতেও লজ্জা করেনি। বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনী মেজর হুদাকে সংসদ সদস্য বানিয়েছিল। ২০০৬ সালে জোর করে ক্ষমতা দখলের জন্য বিএনপির সাবেক আনত্মর্জাতিক সম্পাদক, সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করতে বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়েছিল।১ কোটি ২৩ লক্ষ ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ৫৮(গ) অনুচ্ছেদ যথাযথভাবে অনুসরন না করে আজ্ঞাবহ রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীনকে প্রধান উপদেষ্টা করে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এর অপচেষ্টা করেছিল। দেশে নেমে এসেছিল ১/১১ এর দুর্যোগ, আতংকের শাসন।
খালেদা জিয়ার দুর্নীতি, ক্ষমতার লোভ ও অপকর্মের ফসল ছিলো বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেসময়ে দেশে যে আতংকের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশের কোন গণতন্ত্রকামী মানুষ আর দেখতে চায় না।
বিএনপির নেত্রী ২০০৭ সালের পহেলা জুলাই নিউইয়র্কে পৃথক দুটি টেলিকনফারেন্সে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, " জনগণই একদিন এই ব্যবস্থার বিলুপ্তি চাইবে"।জনগণ বিলুপ্তি চায় বলেই আমরা সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুসরণ করে নির্বাচিত জাতীয় সংসদে এই ব্যবস্থা বিলুপ্ত করেছি।
তিনি বলেন, 'তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে রূপ আমরা দেখেছি, বিরোধীদলীয় নেতা কোন পরিকল্পনায় আবার এর অধীনে নির্বাচনের কথা বলেন? তিনি অভিযোগ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার জন্য প্রধান বিচারপতির বয়স বাড়ানো হয়েছিল। পুরো বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল। খালেদা জিয়াই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন।'
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সরকারের উদ্দেশে ফাইনাল খেলার প্রস্তুতি নেওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেনএর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেমিফাইনাল না খেলেই ফাইনাল খেলা কীভাবে হবে? তিনি বলেন, 'খেলনেওয়ালারা খেলে যাবেন। কাজ করনেওয়ালারা কাজ করে যাবেন। আমরা কাজ করে যাচ্ছি।' প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিবাজ ছেলে ও যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর আন্দোলন বাদ দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান।
চোর-বাটপারের সঙ্গে আলোচনায় না বসা নিয়ে মন্তব্যের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি বিষয়টি এভাবে বলিনি।' তিনি বলেন, আলোচনায় এসেই তো বিরোধী দলের নেতা তাঁর দুর্নীতিবাজ ছেলেদের মুক্তির কথা বলবেন। তিনি বিরোধীদলীয় নেতাকে সংসদে এসে সব বিষয়ে আলোচনার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হবে না। তবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড মেনেও নেওয়া হবে না। তিনি জামায়াতের ভাঙচুর প্রতিরোধে জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ ভালো থাকলে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার ভালো লাগে না। সম্পদ লুট করতে পারছেন না বলে খালেদা জিয়ার এত কষ্ট বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী, দুর্নীতিবাজ, অর্থপচারকারীদের রক্ষার জন্য বিরোধী দলের দেওয়া কর্মসূচি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। বিরোধী দল সরকার উৎখাতের সময়সীমা বেধে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অবস্থায় কিসের আলোচনা।
২৭ সেপ্টেম্বর জনসভায় বিরোধীদলীয় নেতার বক্তব্য ছিল গতানুগতিক। তিনি বললেন, দেশের মানুষ অশান্তিতে আছে। আসলে নিজে সারাক্ষণ অশান্তিতে ভোগেন। ক্ষমতা থেকে বিদায় হওয়ার কষ্ট তার আছে। দুই দুর্নীতিবাজ সন্তানদের লুটপাটের সুযোগ বন্ধ হওয়ার কষ্ট তার আছে। তাই বলেছেন, দেশে এখন অশান্তি। তিনি বলেছেন, দেশে নাকি গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র নাকি অবরুদ্ধ। গণতন্ত্র অবরুদ্ধ হলে তিনি সমাবেশ করলেন কিভাবে? তার রাজনীতির লক্ষ্য, দুই দুর্নীতিবাজ ছেলেকে বিচারের হাত থেকে বাঁচানো।একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী, লাখো শহীদের হত্যাকারীদের রক্ষা করা।তিনি বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তিনি মানেননা। এটাই স্বাভাবিক। কারন, তার স্বামী জিয়া এই যুদ্ধঅপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছিলেন। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে রাজাকারদের গাড়ীতে জাতীয় পতাকা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ওয়াদা ছিল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। মানুষ আমাদের ম্যান্ডেট দিয়েছে। তাদের বিচার আমরা করবোই।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া তার দুর্নীতিবাজ সন্তানদেরদের রক্ষা করতে চাইছেন। তার সন্তানদের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার ঘটনা আমেরিকার ফেডারেল কোর্ট ও সিঙ্গাপুরের আদালতে প্রমাণিত হওয়ার পরেও তিনি বড় কথা বলেন। এরা এমনকি জিয়ার নামে ট্রাষ্ট করে এতিমদের জন্য টাকা এনে সেই টাকা আত্মসাৎ করেছে। এদের দুর্নীতির জন্যই বিএনপি-জামাতের ৫ বছরে বাংলাদেশ পরিচিত ছিলো দুর্নীতির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসাবে।
ভাঙা সুটকেস আর ছেড়াঁ গেঞ্জির ভিতরে কি এমন আলাদিনের চেরাগ ছিলো যে তিনি, তার সন্তান আর ভাইয়েরা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হলেন? দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করেন তখন তার মুখে ভালো কথা মানায়না। কথায় আছে,- "চোরের মার বড় গলা"।
খালেদা জিয়া বলেছেন, আমরা নাকি সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস উঠিয়ে ফেলেছি। খালেদা জিয়া কি বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর মানে জানেননা ? আল্লাহর উপর বিশ্বাস না থাকলে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংবিধানে থাকে কিভাবে?
খালেদা জিয়া দ্রব্যমূল্য নিয়ে কথা বলেছেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ে কথা বলার আগে তাকে জবাব দিতে হবে - যে চাল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২০০১ সালে ১০ টাকা কেজি রেখে এসেছিল তা কেন তার সময়ে ৪৫ টাকা কেজি হয়েছিল? ২০০৮ সালে যে চালের দাম ছিলো ৪৫ টাকা বর্তমানে ৩৫ টাকা। প্রতিবেশী দেশগুলোর দ্রব্যমূল্যের সাথে তুলনা করুন। তারপর কথা বলুন। আমরা সরকার গঠনের পর মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। নতুন জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণা করা হয়েছে। যার বেতন ছিলো ৩ হাজার টাকা তা হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যুনতম বেতন ১৬০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। কৃষক পণ্যের ন্যায্যমূল্য পেয়েছে। আয় বেড়েছে। বিদেশ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে চাল কিনে গরীবদের মধ্যে ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। রোজার মাসে হতদরিদ্রদের মাঝে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। ভিজিএফ, ফেয়ার প্রাইস কার্ড, রেশনিং এর মাধ্যমে গরীব মানুষকে সাহায্য করা হচ্ছে। খালেদা বলেছেন, ক্ষমতায় এলে নাকি বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করবেন। মানুষ ভুলে যায়নি তার সনত্মানেরা এইখাত থেকে কিভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। বি.এন.পি জামাত ৫ বছরে এক মেগাওয়াট উৎপাদন বাড়াতে পারেনি বরং কমিয়েছে। বিদ্যুৎ আমাদের সরকারের অগ্রাধিকার খাত।আড়াই বছরে ২২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন বাড়িয়েছি।২২টি নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হয়েছে।৩৪টির কাজ চলছে।প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। পূরণ করছি। তাদের সময়ের ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে। খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশের অর্থনীতি নাকি খুব খারাপ অবস্থায়। এবছর প্রবৃদ্ধি ৬.৭ ভাগ।গড় আয় বেড়ে ৮২৮ টাকা।বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ। সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ বেড়েছে ৩০%। রফতানি বেড়েছে ৪২%। এরপরেও অর্থনীতির অবস্থা কিভাবে খারাপ হয়? বিরোধীদলের নেতা তাদের সময়ে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়নি বলে অসত্য তথ্য দিয়েছেন। বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময়ে সর্বমোট ৯ বার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। ২০০১ সালে যে ডিজেল রেখে এসেছিলাম ১৫ টাকা ৫০ পয়সা লিটার তা বাড়িয়ে দ্বিগুণেরও বেশী অর্থাৎ ৩৩ টাকা করেছিলেন। ২৫ টাকার অকটেন করেছিলেন ৫৮ টাকা। সাড়ে ১৫ টাকার কেরোসিনের দাম করেছিলেন ৩৩ টাকা। মানুষ এসব ভুলে যায়নি।
আনত্মর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারনে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কারনে এবারের দাম বাড়ানোর পরেও শুধু এই বছরেই সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে ১৪ হাজার ৫শত কোটি টাকা।
খালেদা জিয়া কি চাননা বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হোক? আইন-শৃংখলা পরিসি'তি নিয়ে কথা বলেছেন। তার কাছে আমার প্রশ্ন, র্যা ব কাদের সৃষ্টি? তিনি র্যাইব ও পুলিশকে ট্রেনিং না দেয়ার জন্য বিদেশীদের কাছে আহবান জানিয়েছেন। খালেদা জিয়ার ইচ্ছা কি ? জনগণকে নিরাপত্তাহীন করা? দেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করা? জঙ্গীদের কাছে বাংলাদেশকে জিম্মি করা? আমাদের আড়াই বছরে একই সময়ে ৫০০ স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেনি।
বিরোধীদলীয় নেতার উপর গ্রেনেড হামলা হয়নি। বিরোধীদলের কোন এমপি নিহত হয়নি। ধর্ষণ, বাড়ী ঘর দখল হয়নি ।
তাদের সময়ে কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা, অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরি হত্যা। বাবার কোলে শিশু নওশীন হত্যা, ছাত্রদল ক্যাডারদের হাতে বুয়েটের ছাত্র সনি হত্যা, বগুড়ায় মসজিদে কোরান তেলাওয়াতরত অবস্থায় আজম হত্যার কথা মানুষ ভুলে যায়নি। পাবনায় ২০০ খ্রীষ্টান পরিবারের জমি দখল, খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ মন্দির দখল,বাগেরহাটে একই সংখ্যালঘু পরিবারের ৯ জনকে হত্যা বিএনপি-জামাত আমলের আইন-শৃংখলা পরিসি'তির নমুনা।
ছবিরানী, মাহফুজা, পূর্ণিমা, বেদানা, রজুফা, ফাহিমা, মহিমা ধর্ষণ, ভোলায় একরাতে একশ নারীকে গণধর্ষণ, নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় এক রাতে ৭০ জন নারী ও মেয়ে শিশু ধর্ষণ, গফরগাঁয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী মোজাম্মেল এর ভিটেমাটি কেটে পুকুর বানানোর কথা এদেশের মানুষ কখনো ভুলবেনা। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট আওয়ামী লীগের শানিত্মপূর্ণ সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতা-কর্মীকে কারা হত্যা করেছিল তা আজ তদনেত্মর মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে।
খালেদা জিয়া সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলেন ? তার সময়েই ১৩ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছিলো। শাহরিয়ার কবির, সেলিম সামাদ, এনামুল হক, শিক্ষাবিদ মুনতাসির মামুনকে গ্রেফতার করেছিল। ড: হুমায়ুন আজাদকে বইমেলায় হত্যার চেষ্টা হয়েছিলো। বিরোধীদলের নেতা বলেছেন, আমরা বিদেশে শ্রমবাজার ধরে রাখতে পারিনি। এই বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য। বিএনপি-জামাত সরকারের দুর্নীতির কারনে বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো। বিশ্বমন্দা সত্ত্বেও আমরা সেসব দেশে নতুন করে প্রায় ৯ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান করেছি। শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নিয়েছি। অপ্রদর্শিত আয় ১০% কর দিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। প্রদর্শিত আয়ে ১০% কর রেয়াত। ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। কথায় কথায় হরতাল কি শেয়ারবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পথে বসানোর জন্য ? ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বিভিন্ন সময়ে যারাই ক্ষমতায় ছিলেন তারা ভারতবিরোধিতার সস্তা রাজনীতি করেছেন। কিন্তু একটি সমস্যারও সমাধান করতে পারেননি। বরং দেশকে ভারতীয় পণ্যের বাজার বানিয়েছেন। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকতে দিল্লী সফর শেষে ঢাকায় ফিরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, গঙ্গার পানি নিয়ে আলোচনার কথা তিনি নাকি ভুলে গিয়েছিলেন।
অন্যদিকে যখনই আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে তখনই বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের কাছ থেকে আমাদের ন্যায্য পাওনা আদায় করেছে। সীমান্ত প্রটোকল স্বাক্ষরের মাধ্যমে ভারতের সাথে আমাদের স্থলসীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরফলে আমরা ১৭ হাজার একর জায়গা ভারতের কাছ থেকে পেয়েছি। তিনবিঘা করিডোর দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহলের বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সার্বক্ষনিক খুলে দেয়া হয়েছে। এরফলে ৩৭ বছরের বেশী সময় ধরে ঝুলে থাকা ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। ভারতে বাংলাদেশের ৪৬ টি পন্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিচুক্তির মাধ্যমে আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায় করেছিলো । তিস্তার পানি নিয়েও আলোচনা চলমান। আমরা আশাবাদী, আলোচনার মাধ্যমে সম্ভাব্য দ্রুত সময়ের মধ্যেই এসমস্যার সমাধান করবো ।
এ ছাড়া জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেসব বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শান্তির যে মডেল উপস্থাপন করেছেন, সেসব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন। তিনি জানান, ১৮ সেপ্টেম্বর বিকালে আমি নিউইয়র্ক পৌছাই। ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে সন্ত্রাসবাদ দমন সংক্রান্ত 'কাউন্টার টেররিজম কো-অপারেশন' শীর্ষক জাতিসংঘ সিম্পোজিয়ামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করি। আমার বক্তৃতায় আমি সন্ত্রাস দমনে সমন্বিত কৌশল খুঁজে বের করতে আন-র্জাতিক সমপ্রদায়কে আঞ্চলিক এবং বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা জোরদার করার আহ্বান জানাই। বিশ্বসন্ত্রাস দমনে ৭ দফা সুপারিশ তুলে ধরি। বিদেশি দখলদারিত্ব এবং স্বাধীনতাকামী জনগণের বৈধ সংগ্রামের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্যসহ আনত্মর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ দমনে জাতিসংঘের কমপ্রিহেনসিভ কনভেনশন চূড়ান্ত করার আহ্বান জানাই। আমি স্পষ্টভাষায় বলেছি, বাংলাদেশ সব ধরনের সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা জানায়। আমরা বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সন্ত্রাস কিংবা নাশকতামূলক তৎপরতা চালাতে দেব না। বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সম্পর্কিত ব্যাপক তথ্য-উপাত্তসমৃদ্ধ একটি সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র গড়ে তোলার উপরও জোর দেই। একইদিনে কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ নাসের মোহাম্মদ আল-আহম্মদ আল-সাবাহর সাথে আমার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। এসময় আমি আমাদের নদীগুলির নব্যতা রক্ষায় ড্রেজিংয়ে কুয়েতের সহায়তা চেয়েছি। বাংলাদেশে আরো বেশী কুয়েতি বিনিয়োগের অনুরোধ করেছি। তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছি যা তিনি সানন্দে গ্রহণ করেছেন। একই দিনে জাতিসংঘ আয়োজিত অসংক্রামক ব্যাধি সংক্রান্ত শীর্ষপর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণ করি। এসভায় আমি ক্যান্সার, ডায়াবেটিকস, হৃদরোগ ও অটিজমসহ বিভিন্ন অসংক্রামক ব্যাধিকে বাংলাদেশ ও বিশ্বের জন্য উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করে এসব ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে সাশ্রয়ী মূল্যে ওষুধের জোগান ও প্রযুক্তির সহজ হসতান্তরেরও আহ্বান জানাই। ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আইসিটি এওয়ার্ড নাইট অনুষ্ঠানে যোগ দেই। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নারী ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে অবদানের জন্য আমাকে আন্তর্জাতিক 'সাউথ সাউথ' পুরস্কার দেয়া হয়। আমি মনে করি, এই পুরস্কার ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের কঠোর পরিশ্রমের আনত্মর্জাতিক স্বীকৃতি। আমি এ পুরস্কার দেশের জনগণকে উৎসর্গ করলাম।
তিনি বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর সকালে Clinton Global Initiative এবং সদ্য সমাপ্ত ঈঙচ-১৬ এর আয়োজনকারী দেশ মেক্সিকো এবং COP-17 -১৭ এর আয়োজনকারী দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপ্রধানগণ কর্তৃক আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষক বিশ্বনেতাদের সংলাপে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সরকারপ্রধান হিসাবে দেওয়া ভাষণে আমি জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি পৃথিবীকে রক্ষা করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। এসময় আমি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ সমূহ তুলে ধরি এবং সাম্যতা এবং আনত্মর্জাতিক দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে এর আশু সমাধানে আনত্মর্জাতিক গোষ্ঠীকে আহ্বান জানাই।
সেদিন দুপুরে ইউএস চেম্বার ও এশিয়া সোসাইটি আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজসভায় আমি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার আহবান জানাই। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ মঞ্জুর করতে ইতিবাচক ভূমিকা পালনের জন্য বন্ধুপ্রতিম মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের সহযোগিতা চেয়েছি। বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগ করতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানাই।
২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ অ্যাসেম্বলি হলে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন আয়োজিত "প্রত্যেক নারী ও প্রত্যেক শিশু" শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেই। নারী ও শিশুর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সম্মিলিত অঙ্গীকার জোরদার করতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাই। আমি বিশ্বাস করি, নারী ও শিশুর কল্যাণের ওপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যত। বাংলাদেশ ১৯৯০ সালের তুলনায় শিশু মৃত্যুর হার (আইএমআর) ৬৬ শতাংশে হ্রাস করেছে। এক্ষেত্রে এমডিজি-৪-এর আইএমআর অর্জনের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ১৯৯০ সালের তুলনায় মাতৃমৃত্যুর হার (এমএমআর) ৪৫ শতাংশে হ্রাস করেছে এবং বর্তমানে আমরা এমডিজি-৫-এর এমএমআর অর্জনের পথে রয়েছি। ৬টি প্রতিরোধযোগ্য ব্যাধি নির্মূলে সমপ্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুমৃত্যু হার হ্রাসে সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা ই-হেলথ সার্ভিসের মাধ্যমে ডায়রিয়া প্রতিরোধেও সাফল্য অর্জন করেছি। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব মা ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমাদের সরকারের সাফল্যের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু হয়। সেদিন সকালে কাতারের আমীর শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানির সঙ্গে বৈঠকে আমি বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও এদেশ থেকে আরও জনশক্তি নিতে কাতার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাথেও আমার দুদফা কুশল বিনিময় হয়। দুপুরে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের দেয়া মধ্যাহ্ন ভোজসভায় প্রেসিডেন্ট ওবামার সাথে আমার সাক্ষাত হয়। সন্ধ্যায় ফার্ষ্ট লেডি মিশেল ওবামার দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ওবামাসহ অন্যান্য বিশ্বনেতৃবৃন্দের সাথে আবার কুশল বিনিময় হয়। এসময় প্রেসিডেন্ট ওবামা নারীর ক্ষমতায়ন ও জঙ্গিবাদ দমনে আমাদের সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ সফরে তিনি তার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ২২ সেপ্টেম্বর Economic empowerment of rural women and food and nutrational security অর্থাৎ 'গ্রামীণ নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং খাদ্য ও পুষ্টিগত নিরাপত্তা' শীর্ষক এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করি। এই সেমিনারের মূল উদ্যোক্তা ছিল বিশ্ব খাদ্যসংস্থা, ইউনাইটেড ন্যাশন্স উইমেন ও নেদারল্যান্ডস সরকার। সেমিনারে গ্রামীণ নারীর ক্ষমতায়নে বিভিন্ন সফলতার জন্য বাংলাদেশ সবার প্রশংসা অর্জন করে। আমার প্রবন্ধে আমি উল্লেখ করি যে, বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র ও সমাজের সব স-রে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকারি নীতি-কৌশল নারীর ক্ষমতায়নকে সব উন্নয়ন এজেন্ডার কেন্দ্রে স্থাপন করেছে। আমরা বিশ্বাস করি দারিদ্র্য ও ক্ষুধা হ্রাস করা জেন্ডার সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নত মাতৃস্বাসে'্যর লক্ষ্য অর্জনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এদিন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৬তম অধিবেশনের সভাপতি নাসির আব্দুল আজিজ আল নাসেরের সাথে আমার বৈঠক হয়।
২৩ সেপ্টেম্বর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের সাথে আমার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এদের মধ্যে রয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, সৌদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স সউদ আল ফয়সল, কমনওয়েলথ মহাসচিব কমলেশ শর্মা, জাতিসংঘের নবীনতম সদস্য দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট সালভা কির মায়ারডিপ, তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তায়েপ এরদুগান এবং মালদ্বীপের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডঃ মোহাম্মদ ওয়াহেদ।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের সাথে বৈঠকের সময়ে তিনি এমডিজি অর্জনে আমাদের সরকারের অগ্রযাত্রার প্রশংসা করেছেন। আমি তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন।
২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ষ্টেটমেন্ট প্রদান করি। আমি আমার বক্তব্যে বলেছি, শান্তিই হচ্ছে উন্নয়নের সোপান। আর শানিত্ম তখনই বিরাজ করে, যখন ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ''সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বৈরিতা নয়'' এবং ''সকল বিরোধের শানিত্মপূর্ণ সমাধান'' নীতি গ্রহণ করেছিলেন। সাঁইত্রিশ বছর আগে জাতিসংঘের মঞ্চ থেকেই তিনি একথা উচ্চারণ করেছিলেন।
সেই ধারাবাহিকতায় শানিত্মর জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা আমাদের সরকারের অভ্যনত্মরীণ এবং বৈদেশিক নীতির অন্যতম সত্মম্ভ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
আমার সরকারের শান্তিপূর্ণ মধ্যস'তার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম শানিত্মচুক্তি, ভারতের সাথে গঙ্গা পানি চুক্তি, বিডিআর বিদ্রোহ নিরসন এবং সমপ্রতি বাংলাদেশ-ভারতের দীর্ঘ ৪০ বছরের সীমানত্ম বিরোধের অবসান ইত্যাদি উদাহরণ তুলে ধরি।
জাতিসংঘের ৬৬ তম অধিবেশনমঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি সারাবিশ্বের জন্য একটি শান্তির মডেল উপস্থাপন করেছি যার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে জনগণের ক্ষমতায়ন। এটি একটি বহুমাত্রিক ধারণা যেখানে গণতন্ত্র এবং উন্নয়নকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়া হয়েছে। এতে আছে ছয়টি পরস্পর ক্রিয়াশীল বিষয় যা শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এগুলো হচ্ছে (১) ক্ষুধা এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ (২) বৈষম্য দূরীকরণ, (৩) বঞ্চনার লাঘব, (৪) ঝড়েপড়া মানুষদের সমাজের মূলধারায় অনত্মর্ভুক্তি, (৫) মানবসম্পদ উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এবং (৬) সন্ত্রাসবাদের মূলোৎপাটন।
আমি এর নাম দিয়েছি ''জনগণের ক্ষমতায়ন ও শান্তির মডেল''। এর মূল বিষয় হচ্ছে সকল মানুষকে সমান চোখে দেখা এবং মানবিক সামর্থ্য উন্নয়নের কাজে লাগানো। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে আমি জেনেছি যে, জনগণের ক্ষমতায়ন ছাড়া শান্তি ও উন্নয়ন অসম্ভব। বিশ্বনেতাদের প্রতি এই শান্তিরর মডেলটি প্রয়োগ করার আহবান জানিয়েছি।
২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে"A culture of peace" নামে Annual Flagship Resolution উপস্থাপন করেছিলাম। এবার আমার শানিত্মমডেলের আলোকে বাংলাদেশ জনগণের ক্ষমতায়ন শীর্ষক একটি নতুন রেজুলুশন ৬৬ তম অধিবেশনে পেশ করেছে।
এ প্রসঙ্গে আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০০০ সালে জাতিসংঘের মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট সামিটে নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আমি নির্বাচিত সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাতের অগণতান্ত্রিক ধারার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার আহবান জানিয়েছিলাম।
আনত্মঃরাষ্ট্র জাতিগত সংঘাত নিরসন, সন্ত্রাসবাদ দমন, আনত্মঃসীমানা অপরাধ দমন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলা, দারিদ্র্য বিমোচন, পানি ও জ্বালানি নিরাপত্তা তৈরি এবং ধনী ও গরীবের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য বিলোপে জাতিসংঘকে আরো কার্যকর করার কথা বলেছি।
আপনারা জানেন, জাতিসংঘ শানিত্মরক্ষী বাহিনীতে ছত্রিশটি দেশের বায়ান্নটি মিশনে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত এক লাখ বাইশ হাজার চুরানব্বই জন শানিত্মরক্ষী প্রেরণ করেছে। এসব মিশনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাংলাদেশের ১০৩ জন শানিত্মরক্ষী শহীদ হয়েছেন।
বিশ্বের প্রায় তিনশো মিলিয়ন মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। আমি বাংলাভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা দিতে আমাদের আবেদনের প্রতি সকলের সমর্থন কামনা করছি। এছাড়াও আমার বক্তৃতায় আমি ক্ষুধা, দারিদ্র ও অশিক্ষার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের সাহসী সংগ্রাম ও সাফল্যের কথা তুলে ধরেছি।
বিশেষ করে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপ, জ্বালানি নিরাপত্তা ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যা মোকাবেলায় আমাদের উদ্যোগ ও নারীর আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে আমাদের সাফল্য সবার প্রশংসা অর্জন করেছে।
আমি বলেছি, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা ছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এজন্যই ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারের জন্য একটি স্বাধীন আনত্মর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সনদের অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে আমরা অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ। অতীত ভুলের সংশোধনের এটিই একমাত্র পথ। এর মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য সুসংহত হবে।
আমি এবং আমার পরিবার বারবার সন্ত্রাসের শিকার হয়েছি। ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট এবং ২০০৪ সালের ২১ আগষ্টের ভয়াবহতা থেকে আমি জানি, সন্ত্রাস কিভাবে গণতন্ত্র ও উন্নয়নকে ধবংস করে দেয়। তাই সন্ত্রাস নির্মুলে আমি আমার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি।
এবারের নিউইয়র্ক সফরকালে বিভিন্ন আনত্মর্জাতিক মিডিয়া যেমন, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ভয়েস অব আমেরিকা পৃথকভাবে আমার সাক্ষাৎকার নেয়। এসব সাক্ষাৎকারে আমি সমসাময়িক পরিসি'তি বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, আঞ্চলিক ও আন-র্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ডিজিটাল বাংলাদেশ, দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রসঙ্গে আমার দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরেছি।
২৪ সেপ্টেম্বর বিকালে আমি নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশ ও জাতির কল্যাণে আমাদের সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরি। ২৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ার জোসেফ ক্রাউলি আমার সাথে সাক্ষাত করেন। বিকালে প্রবাসীদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেই। এসময়ে আমি তাদের প্রতি বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে তাদেরকে শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করার আহ্বান জানাই। দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের কথা স্মরণ করে বাংলাদেশে তাদেরকে আরো বেশি করে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহবান জানিয়েছি। প্রবাসীদের বিপুল উচ্ছাস ও আনন্দের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করি।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এই অধিবেশনে যোগ দিয়ে এবং কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আমি চেষ্টা করেছি বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের উদার, শান্তিকামী ও গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তিকে উর্ধ্বে তুলে ধরতে। ক্ষুধা, দারিদ্র, অশিক্ষা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী চলমান সংগ্রামে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে রোলমডেল হিসাবে তুলে ধরতে চাই। এই সফরে আমি আনত্মরিকভাবে সেই চেষ্টাই করেছি। বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছি শান্তির মডেল যার মাধ্যমে অর্জিত হবে আর্ত-মানবতার মুক্তি।
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শুরু হওয়া সংবাদ সম্মেলনটি চলে বেলা দুইটা পর্যন্ত। সংবাদ সম্মেলনে সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শুদ্ধি অভিযান ॥ আওয়ামী লীগে
চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে ৰমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ৰমতায় আসার প্রায় পৌনে তিন বছরের মাথায় দলটি শুরু করতে যাচ্ছে তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রম। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই তৃণমূলে ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলনের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে এই শুদ্ধি অভিযান। পর্যায়ক্রমে ওয়ার্ড থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত ধারাবাহিক সম্মেলনের মাধ্যমে ঝিমিয়ে পড়া সাংগঠনিক শক্তিকে চাঙ্গা ও শক্তিশালী করার পাশাপাশি নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে প্রান্ত থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছে শাসক দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
তৃণমূল পর্যায়ের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভা আহ্বান করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই যৌথ বৈঠকেই এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণের পাশাপাশি মহাজোটকে আরও সক্রিয় ও বেগবান করতে শেখ হাসিনা দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিশেষ দায়িত্ব অর্পণ করতে পারেন বলে দলের সূত্রগুলো জানিয়েছে।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সরকারী সফরের আগের দিন এই যৌথসভা আহ্বান করা হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয়ই আলোচনায় প্রাধান্য পাবে। বিশেষ করে যেসব জেলায় এক যুগ ধরে সম্মেলন হয় না সেসব জেলা কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হতে পারে। ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার পাশাপাশি ভেঙ্গে দেয়া জেলা কমিটিগুলো আগে সম্মেলনের মাধ্যমে পুনর্গঠনের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে দলটির নীতিনির্ধারকদের।
জানা গেছে, সারাদেশে ঝিমিয়ে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা এবং সংগঠনকে শক্তিশালী কীভাবে করা যায়, সে ব্যাপারে অভিজ্ঞ ও পোড়খাওয়া নেতাদের পরামর্শ নিতেই কেন্দ্রীয় কমিটির পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদকে নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধানত্ম হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে বিরোধী দলকে মোকাবেলার কৌশল, বিরোধী দলের অভিযোগের জবাব এবং সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাপকভাবে দেশের জনগণের সামনে তুলে ধরার কৌশল নির্ধারণ হতে পারে আগামীকালের যৌথ বৈঠকে। দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের সাংগঠনিক কার্যক্রম। এ কার্যক্রমের মধ্যে প্রধান কর্মসূচী হলো ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলন। আওয়ামী লীগ ৰমতায় আসার পর তৃণমূল পর্যায়ে এটাই হবে বড় ধরনের তৎপরতা। এ ওয়ার্ড সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে দলের নেতাকমর্ীরা চাঙ্গা ও সংগঠন শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাঁরা বলছেন, এর মাধ্যমে তৃণমূলে রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠবে। পাশাপাশি সরকারের সফলতা ও বিরোধী দলের অপপ্রচারের বিষয়গুলোও তৃণমূল পর্যায়ে তুলে ধরা হবে।
এদিকে ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন শুরম্ন করার জন্য এরই মধ্যে কেন্দ্র থেকে জেলা কমিটির কাছে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। সেই অনুযায়ী সম্মেলন শুরম্ন করার প্রস্তুতি চলছে জেলা পর্যায়ে। চলতি বছরের মধ্যেই ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও পৌরসভা, এরপর উপজেলা ও জেলা সম্মেলন করার টার্গেট নিয়েই নামছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে দলের সাত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের ওয়ার্ড সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, আগামীকালের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউইয়র্ক সফরকালীন সময়ের জন্য সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। এছাড়া সংগঠন গোছানোর পাশাপাশি মহাজোটকেও অধিক সক্রিয় ও চাঙ্গা করে তুলতেও বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হতে পারে সাজেদা চৌধুরীকে।
গত ৬ ফেব্রম্নয়ারি আদর্শিক জোট ১৪ দলের সর্বশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন বৈঠক না হওয়া এবং প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় মহাজোটের শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব অনেক বেড়েছে। দ্রম্নত শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অভিমান ভাঙ্গিয়ে মহাজোটকে সক্রিয় ও শক্তিশালী করার জন্যও দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সিনিয়র নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। আগামীকালের বৈঠকে মহাজোটকে সক্রিয় ও জোটের পরিধি সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশ দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।